জাতের নামঃ |
বিনাধান-১০ |
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ |
একটি লবন সহিষ্ণু, উচ্চ ফলনশীল, আলোক অসংবেদনশীল ও উন্নত গুনাগুন সম্পন্ন বোরো ধানের জাত। জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন। কুশি অবস্থা থেকে পরিপক্কতা পর্যন্ত ১০-১২ ডিএস/মিটার এবং চারা অবস্থায় ১২-১৪ ডিএস/মিটার মাত্রার লবণাক্ততা সহনশীল। |
জমি ও মাটিঃ |
দেশের লবণাক্ত ও অলবণাক্ত উভয় এলাকায় এ জাতটি চাষের উপযোগী। তবে অলবণাক্ত এলাকায় ফলন কিছুটা বেশি পাওয়া যায়। বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি এ জাতটি চাষের উপযোগী। |
জমি তৈরীঃ |
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা বোরো জাতের মতই। |
বপণের সময়ঃ |
এ জাতের বীজ নভেম্বর মাসের ১ম সপ্তাহ হতে শুরু করে ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত বীজতলায় ফেলার উপযুক্ত সময়। পাঁচ শতাংশ (২০০ বর্গ মিটার) পরিমাণ বীজতলায় ১০ কেজি বীজ ফেলা যায়। |
বীজ হার ঃ |
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। |
বীজ শোধন ঃ |
উপযুক্ত ফলন নিশ্চিত করতে হলে পুষ্ট ও রোগবালাই মুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি ১০ কেজি বীজ শোধনের জন্য ২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ ব্যবহার করলে ভাল হয়। |
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ |
প্রতি হেক্টরেঃ বীজতলার জন্যঃ উর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে বীজতলা তৈরী করলে কোন রূপ সার প্রয়োজন হয়না। অনুর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে কেবল দুই কেজি পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার প্রয়োগ করলেই চলে। চারা গজানোর পর গাছ হলুদ হয়ে গেলে দু’সপ্তাহ পর প্রতি বর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর জমি থেকে পানি নিষ্কাশণ করা যাবেনা। রোপা ক্ষেতের জন্যঃ ইউরিয়াঃ ২১০-২৩০ কেজি, টিএসপিঃ ১১০-১২০ কেজি, এমওপিঃ ৬০-৮০ কেজি, জিপসামঃ ৪৫-৫০ কেজি ও দসত্মাঃ ৪.০-৪.৫ কেজি। প্রয়োগের নিয়মঃ রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি এবং এমওপি জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের অর্ধেক পরিমাণ চারা রোপনের ৭-৮ দিন পর এবং বাকি অর্ধেক ২০-২৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমনকরতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও দসত্মা সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে এক চাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা অবশ্যক। |
সেচ ও নিষ্কাশনঃ |
জমি তৈরীর সময় ২/৩ বার স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ত পানি বের করে দিলে জমির লবণাক্ততা অনেকটা কমে যায়। তাছাড়া কুশি, ফুল আসা ও পরিপক্কতার সময় লবণের মাত্রা ১০ ডিএস/মিটারের বেশী হলে স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ততা কমিয়ে আনতে হবে। ধান পাকার ১০-১২ দিন আগে জমির পানি শুকিয়ে ফেলা ভাল |
আগাছা দমন ও মালচিংঃ |
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করতে হবে । |
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ |
রোগ বালাই ও কীট পতঙ্গের আক্রমণ দেখা দিলে নিকটস্থ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার উপদেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে প্রচলিত তরল বা দানাদার কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া খোলা ঝলসানো, ব্যাক্টেরিয়াল লিফ ব্লাইট বা পাতা ঝলসানো ও অন্যান্য রোগ দেখা দিলে উপযুক্ত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। খোল ঝলসানো, কান্ড পচাঁ রোগ দেখা দিলে বেনলেট, হোমাই, বেভিস্টিন বা টপসিন মিথাইল মাত্রা অনুযায়ী প্রয়োগ করা যেতে পারে। |
হেক্টর প্র্তি ফলনঃ |
লবণাক্ত জমিতে গড় ফলন ৫.৫-৬.০ টন/হেঃ (বোরো মৌসুম) এবং অলবণাক্ত স্বাভাবিক জমিতে গড় ফলন ৭.৫-৮.৫ টন/হেঃ (বোরো মৌসুম) |
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ |
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা) কল করুনঃ +৮৮০১৭১৬২৮০৭২১ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী |
চিত্র: বিনাধান-১০ এর মাঠ